ভএ প্রগট গোপাল দীন দয়ালা যশোমতিকে হিতকারী।
হরষিত মহতারী রূপ নেহারী মোহন মদন মুরারি।।১।।
কংসাসুর জানা মনে অনুমানা পূতনা বেগ পাঠায়ি।
তেহি হরষিত ধায়ি মন মুচুকায়ী গেই যাঁহা যদুরায়ি।।২।।
তেহি যায়ি উঠায়ি হৃদয় লাগায়ি পয়োধর মুখ মে দীন্হ্।
তব কৃষ্ণ কানাই মন মুচুকায়ী প্রাণ তাকো হরি লীন্হ্।।৩।।
যব ইন্দ্র রিষায়ে মেঘন লায়ে বশ করে তাহে মুরারি।।
গৌঅন হিতকারী সুরমনহারী নখপর গিরিবরধারী।।৪।।
কংসাসুর মারো অতি অহঙ্কারো বৎসাসুর সংহারো ।
বকাসুর আয়ো বহুত ডরায়ো তাকো বদন বিদারো।।৫।।
তেঁহি অতি দীন জানি প্রভু চক্রপাণি তাহে দীন্হ্ নিজ লোকা।
ব্রহ্মাসুর আয়ো অতি সুখ পায়ো মগন ভয়ে গয়ে শোকা।।৬।।
ইহ ছন্দ অনুপা হৈ রসরূপা যো নর ইয়াকো গাওয়ে।
“তেহি সম নহি কোই ত্রিভুবনে সোহি মনোবাঞ্ছিত ফল পাওয়ে।।”৭।। (৩ বার পাঠ্য)
নন্দ যশোদা তপ কিয়ো মোহন সে মন লায়ে।
দেখন চাহত বালমুখ রহেঁ কছুক দিন যায়।।৮।।
যো নক্ষত্র মোহন ভএ সো নক্ষত্র, পর আয়।
চারি বধায়ি রীত সব করোতি যশোদা মাই।।৯।।
শৃঙ্গার আরতির অনুবাদ
অনুবাদ – মাতা যশোমতীর হিতকারী দীনদয়াল গোপাল আবির্ভূত হলেন। সেই ভগবান মুরারির মদনমোহন অপরূপ সৌন্দর্য দর্শন করে জননী অত্যন্ত আনন্দিত হলেন।১।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যে আবির্ভূত হয়েছেন এটা যেন মনে মনে অনুমান করেই কংসাসুর জানতে পারল এবং তাড়াতাড়ি পূতনাকে পাঠাল। পূতনাও খুশী হয়ে মনে মনে মুচকি হাসি হেসে যেখানে যদু বংশের রাজা শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন সেখানে ধাবিত হল।২।
পূতনা সেখানে পৌঁছে তাঁকে কোলে তুলে নিল এবং বুকে ধরে তাঁর মুখে স্বীয় স্তন্য প্রদান করল। তখন কৃষ্ণকানাই মনে মনে মুচকি হাসি হেসে (স্তন্য পানচ্ছলে) তাহার প্রাণ হরণ করলেন।৩।
ইন্দ্র যখন রুষ্ট হয়ে মেঘপুঞ্জ নিয়ে এল (প্রবল বর্ষণের দ্বারা ব্রজবাসিদেরকে শাস্তি দেবার উদ্দেশ্যে) তখন মুরারি তাকে বশীভূত করেছিলেন। গো সকলের হিতকারী, দেবগণেরও মনোহারী শ্ৰীকৃষ্ণ তখন স্বীয় হস্তাঙ্গুলীর নখের উপর গোবর্ধন পর্বতকে ধারণ করলেন (এবং প্রবল বর্ষণ হতে সকলকে রক্ষা করলেন ।)।৪।
তিনি অতি অহঙ্কারী কংসাসুরকে বধ করলেন এবং বৎসাসুরকে সংহার করলেন। বকাসুর এসে বহু ভয় দেখাল কিন্তু তিনি তার মুখমণ্ডল বিদীর্ণ করে তার বধ করিলেন।৫।
প্রভু চক্রপাণি শ্রীকৃষ্ণ তাকে অত্যন্ত দীন জেনে নিজের লোক প্রদান করলেন অর্থাৎ স্বীয় ধামে নিয়ে গেলেন। শ্রীকৃষ্ণের লীলাপ্রসঙ্গে ব্রহ্মা এবং দেবগণও তথায় আগমন করিলেন এবং বিগতশোক হয়ে অতিশয় সুখলাভ করিলেন এবং আনন্দে মগ্ন হইলেন।৬।
ভগবানের এই স্তুতি অতুলনীয়, রসময় ও আনন্দস্বরূপ ; যিনি এই গাথা কীর্তন করেন, ত্রিভুবনে তার সমান কেহ নাই, তিনি মনোবাঞ্ছিত ফল প্রাপ্ত হন।৭।
নন্দ ও যশোদা বালগোপালের সেই মোহন মুর্তিতে মন নিবিষ্ট করে তপস্যা করেছিলেন। সেই বালগোপালের মুখের পানে চেয়ে কিছুদিন কেটে গেল।৮।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মনোমুগ্ধকারী যে নক্ষত্র, তাতে অর্থাৎ রোহিণী নক্ষত্রে আবিভূত হলেন। মা যশোদা চারিপ্রকারে সমস্ত মাঙ্গলিক আনন্দ অনুষ্ঠান করালেন।৯।
রাধাবর কৃষ্ণচন্দ্রকী জয়, বিনতাসুত গরুড়দেবকী জয়, পবনসুত হনুমানকী জয়, উমাপতি মহাদেবকী জয়, রমাপতি রামচন্দ্রকী জয়, বৃন্দাবন কৃষ্ণচন্দ্রকী জয়, ব্রজেশ্বরী রাধারানীকী জয়, বলো ভাই সব সন্তন ও ভক্তনকী জয়, আপনা আপনি গুরুগোবিন্দকী জয়, মঙ্গল-শৃঙ্গার আরতিকী জয়, জয় জয় শ্রীরাধেশ্যাম।
প্রাতঃকালীন স্তুতির পর কিছু সময় “জয় রাধেশ্যাম, রাধেশ্যাম, রাধেশ্যাম জয় শ্যামাশ্যাম; জয় সীতারাম, সীতারাম, সীতারাম জয় সীয়াবররাম, জয় রাধেশ্যাম — সহকারে কীৰ্ত্তন করতে হয়, তৎপর জয়ধ্বনি দিতে হয়।